আমি টিএসসির প্রক্ষালন কক্ষ বলছি…
মো: রবিউল ইসলাম ও মেহেরুন নাহার মেঘলা
ডিইউএমসিজেনিউজ.কম
প্রকাশিত : ০১:৩৩ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার

আমি টিএসসির প্রক্ষালন কক্ষ বলছি…
আমি টিএসসি’র(ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র) প্রক্ষালন কক্ষ। আমাকে কতদিনই বা প্রত্যাখ্যান করে অমনোযোগী থাকবে? এই যে আমি টিএসসি প্রাঙ্গণের এক কোণায় পড়ে থাকি। কত শত শিক্ষার্থী, ভ্রমণকারী, অস্বস্তিতে পড়া মানুষগুলোকে দু দন্ড শান্তি দিয়েছি তা কারো চোখেই বুঝি পড়েনি এতদিন। বরং নাক সিটকে গাল মন্দ করে চলে গেছে অনেকে। আমার ভিতরে নাকি দমবন্ধ করা গন্ধ। শ্যাওলা, স্যাঁতস্যাঁতে আর নোংরা বেসিনে মুখ ধুতে তাদের ঘেণ্ণা লাগে। আর আজ এখন আমার গায়ে নতুন বেসিন বসেছে, ঝকঝকে প্যান, হাই কমোড আর চকচকে আয়নায় সেজেছি আমি। সংখ্যাতেও কম না। বারোটা বেসিন, পাঁচটা ইউরিন প্যান, পাঁচটা হাইকমোড আর চারটা টয়লেট প্যান। ছেলে মেয়ের জন্যে আলাদা আলাদা হয়ে ভাগ হয়ে গেছি।
এখন তোমরা এসে সেলফি তোলো, রূপ দেখো, রঙ মাখো আমার আয়নায়। এই সজীব তোমাদের দেখতে ভালো লাগে। অনেকে আবার এক পলক দেখার জন্যও এসে ঘুরে যাও অতি উৎসাহে। তখন বেশ ভালোই লাগে আমার!
আমার এই অবস্থায় আসার পেছনে অবশ্য অবদান রয়েছে তোমাদেরই পূর্বসূরিদের। যাদের তোমরা ভালবেসে এ্যালামনাই বলে ডাকো শুনি। এই যে প্রায় তিন মাস ধরে মার্কেন্টাইল নামের এক বেসরকারী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আমার কাঠামো গড়া হয়েছে। আধুনিক বেসিন, ইউরিন প্যান, হাই কমোড, চকচকে টাইলসে তৈরি মেঝের মধ্যে তোমাদের আকর্ষণ দেখা যায় বেসিনগুলোর প্রতি। বেসিনের কল ছাড়ার ১০ সেকেন্ড পর আপনা আপনিই পানির স্রোত বন্ধ হয়ে যায়, এইটা দেখার কী আগ্রহই না তোমাদের! এইসব দেখলে আমার আনন্দই হয়। কিন্তু তাই বলে এসব বারবার পরখ করতে গিয়ে তোমরা না আবার অকেজো করে বসো। শুনেছি উপকারী গাছের নাকি ছাল থাকে না।
শুনলাম টিএসসির ডিরেক্টর এ এম এম মহিউজ্জামান চৌধুরী সাহেব বলেছেন, আমার দরজায় নাকি আচরণবিধি ঝোলানো হবে। আমার প্রতি তোমাদের আচরণ কেমন হবে, কিভাবে সভ্য শুচি চর্চা করতে পারো সেসব নিয়েই নানা কথাবার্তা। ‘সামাজিকভাবে অসুস্থ’ মেলামেশা নিয়ে মাঝে মধ্যেই মেলা ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয় আমাকে। সেসব নিয়েও সতর্ক করে দেয়া হবে নির্দেশিকায়।
এই যে দেখ নতুন আমার এখনো আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। অথচ তোমাদের কথা চিন্তা করে অনেক আগেই আমাকে খুলে দেয়া হয়েছে সর্বসাধারণের জন্য। কথা ছিলো উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে উদ্বোধন করবেন। কিন্তু সে আর হলো কই! চেহারা এই কয়দিনে যে বেশ মলিন হয়েছে আমার।
এই যে আপনারা শিক্ষিত সমাজের কুশীলবরা আমার দ্বারে বর্জ্য ফেলে যান, নোংরা করে রেখে যান আমার কলেবর। অথচ ভুলে যান পরদিন আবার এই এখানেই আপনাকে ফিরে আসতে হবে বিশেষ প্রয়োজনে। আপনাদের বলছি-
পরিচ্ছন্নতার শিক্ষাটা এই ছোট্ট ক্ষেত্র থেকেই শুরু হোক। তারপর ছড়িয়ে যাক সমাজে। পরিষ্কার রাখুন আমাকে আর পরিচ্ছন্ন থাকুন সবাই।
ডিইউএমসিজেনিউজ/রবি/মেঘলা
- ঢাবি’র সকল শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত
- ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে খোলা থাকছে ঢাবি`র অফিসসমূহ
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
- চত্বরের সমারোহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নামের পেছনের গল্প
- আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট: ভিনদেশীয় ভাষা শেখার পথপ্রদর্শক
- রোকেয়া হল সংসদের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি
- ঢাবির শামসুন্নাহার হলে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার
- আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট: ঢাবি শিক্ষার্থীদের ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র
- কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি জ্ঞান চর্চা নাকি চাকরির পড়াশুনার আতুরঘর
- এমসিজে-৪০৯ শিক্ষার্থীদের অনলাইন মিডিয়া হাউজ পরিদর্শন